নেতৃত্ব

একটা সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী তার অধস্তনদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে কাজ আদায়ে সচেষ্ট হন। সকল সিদ্ধান্ত নিজেই নেন। আবার অধস্তনদের কাছ থেকে শর্তহীন আনুগত্য প্রত্যাশা করেন। কিন্তু কর্মীরা বসের নেতৃত্বকে ভালোভাবে নেয় না। তারা মানসিক কষ্ট নিয়ে কাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে কর্মীরা দুই- একজন করে চাকরি ছেড়ে দিতে থাকে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি সংকটাবস্থায়।

মি. X কর্মীদের ভালো-মন্দ বিবেচনা না করে কাজ। তিনি কর্মী আদায়ের বিষয়টিকেই অধিক গুরুত্ব দেন। ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মূল্যায়ন না করেই তিনি বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ১০০ টন পণ্য আমদানি করেন। পরবর্তীতে উক্ত পণ্য বিক্রয়ে মুনাফা লাভে ব্যর্থ হন। যা প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

জনাব সাব্বির ABC সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজের উৎপাদক উৎস ব্যবস্থাপক। কর্মীদের কাজ তিনি সময় ও মান অনুযায়ী নির্দিষ্ট করে দেন এবং এর ভিত্তিতে কাজ হচ্ছে কিনা তা তদারকি করেন। তবে কর্মীদের কাছ থেকে বেশি কাজ আদায়কেই গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। তিনি কর্মীদের কোনো সুযোগ-সুবিধা দেন না। জনাব সাব্বির কর্মীদের চাইতে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনকেই প্রাধান্য দেন। কর্মীরা এ অবস্থার উত্তরণ চায়।

জনাব জাহিন একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা। পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি নিজে প্রতিষ্ঠানে খুব একটা সময় দেন না; বরং কর্মীদের ওপর দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে চান। ফলে প্রতিষ্ঠানটি মারাত্মক আর্থিক সংকটে পড়ে যায়। এ অবস্থা হতে উত্তরণে তিনি নেতৃত্বের কৌশল পরিবর্তন করে কর্মীদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কাজ পরিচালনা করতে চান। 

আশিক রসুলপুরে ১০ জন শ্রমিক নিয়ে একটি বেকারি শুধু করে। তার আত্মবিশ্বাস, দূরদর্শিতা এবং কর্মীদের সাথে উত্তম আচরণের ফলে ব্যবসায়ে সফলতা আসে। তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মীদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ায় প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতা ও পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তার বেকারিতে উৎপাদিত পণ্যের বাজার আশে-পাশের এলাকাতে সম্প্রসারিত হচ্ছে।

জনাব রশীদ ও জনাব ইমন যথাক্রমে ডরিন লি. ও> আলিফ লি. এর স্বত্বাধিকারী। জনাব রশীদের উদাসীনতার সুযোগে সক ডরিন লি. এর ব্যবস্থাপক ও কর্মকর্তাগণ নিজেদের খেয়ালখুশিমতো কার্য পরিচালনা করেন। ফলে উক্ত প্রতিষ্ঠানটির সাফল্য দিন দিন হ্রাস *পাচ্ছে। পক্ষান্তরে, জনাব ইমন তার প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক ও অন্যান্য কর্মকর্তাদেরকে সাথে নিয়ে এবং তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করায় আলিফ লি. এর সাফল্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রাইম কোম্পানি লি. এর কর্মচারীরা তাদের মধ্যে সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ জনাব মোস্তাফিজকে কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি হিসেবে মনোনীত করে। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব ইকবাল কর্মীদের ভালোমন্দের গুরুত্ব না দিয়ে শুধু প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম ঠিকমতো পরিচালনা করা হচ্ছে কিনা তা তত্ত্বাবধান করেন। যেকোনোভাবে কাজ আদায় করাটাই তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। 

শরিফ স্টাইল লি. এর একটি উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১,০০০ কর্মী কাজ করে। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মনে করেন কর্তৃপক্ষের অধিক সহানুভূতিশীলতার সুবাদে কর্মীরা অলস হয়ে পড়েছে এবং কর্মীরা কাজ এড়িয়ে চলায় প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। তাই তিনি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে কর্মীদের। থেকে কাজ আদায় করতে চান এবং কোনো পরিকল্পনা প্রণয়নে কর্মীদের অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

জেনারেল ম্যানেজার মি. আশরাফ বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে মাঝেমধ্যেই সভা করেন। প্রত্যেক বিভাগের সুবিধা-অসুবিধা শোনেন এবং করণীয় নির্দেশ করেন। তার বিক্রয় ব্যবস্থাপকের চিন্তা এভাবে সভা না করে অধস্তনদের টার্গেট নির্ধারণ করে দিয়ে চাপ দিলে কাজ ভালো হবে। প্রথমদিকে তার চিন্তা কিছুটা কাজে আসলেও পরে বিক্রয় কমেছে।

ক্রয় ব্যবস্থাপক জনাব সাকিব প্রাতিষ্ঠানিক কাজে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের মতামত গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় কর্তৃত্ব অধস্তনদের কাছে হস্তান্তর করেন। পক্ষান্তরে অর্থ বিভাগের ব্যবস্থাপক জনাব রিপন কারও সাথে পরামর্শ না করে নিজের মতো করে কাজ করেন। অধস্তনদের প্রয়োজনাতিরিক্ত আদেশ প্রদান, ভয়-ভীতি প্রদর্শন এবং অহেতুক তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করেন।